কলকাতা, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫:
আদিত্য একাডেমি, দমদম এ বছর হ্যালোউইন উদযাপন করল এক অভিনব থিমে — “যেখানে পশ্চিমের সঙ্গে মিলিত পূর্ব”, যেখানে পাশ্চাত্যের উৎসব ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে গেল ভারতীয় সিনেমার গল্প বলার ঐতিহ্যে। পুরো ক্যাম্পাস রূপ নিল এক রঙিন সৃজনশীল ও সাংস্কৃতিক আবহে।

প্রাইমারি বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা প্রেরণা নিয়েছিল সত্যজিৎ রায়ের “ভূতের রাজা দিলো বর” থেকে, যেখানে গুপী-বাঘা আবারও ফিরে এল এক ইতিবাচক, কল্পনাপ্রবণ রূপে। গান ও নাট্যাভিনয়ের মাধ্যমে তারা দেখিয়েছিল, কীভাবে “ভাল ভূতেরা” সাহস, মানবিকতা ও সৃজনশীলতার প্রেরণা দেয় — মনে করিয়ে দিল যে বাংলা লোককথাতেও আছে বুদ্ধিদীপ্ত ও প্রজ্ঞাময় আত্মার গল্প।

মিডল স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা হ্যালোউইনের পাশ্চাত্য দিকটি ফুটিয়ে তুলেছিল রঙিন পোশাক, কুমড়ো সাজসজ্জা ও থিমভিত্তিক নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে। ভ্যাম্পায়ার, জাদুকরী, পরীর ভূত থেকে শুরু করে সুপারহিরো — তারা সৃজনশীলতার মাধ্যমে ভয়ের মধ্যেও আনন্দ খুঁজে পেল।

পুরো করিডোর জুড়ে দেখা গেল ভৌতিক ও ঐতিহ্যবাহী শিল্পের অপূর্ব সংমিশ্রণ — মাটির জ্যাক-ও-ল্যান্টার্নের পাশে টেরাকোটা মুখোশ, আলপনার নকশায় গাঁথা মাকড়সার জাল — যা এই সাংস্কৃতিক মিলনের প্রতীক হয়ে উঠেছিল।

একাডেমিক ডিরেক্টর মিসেস সবিতা সাহা বলেন,
“‘যেখানে পশ্চিমের সঙ্গে মিলিত পূর্ব’— এই থিমটি আমাদের বিশ্বাসকে প্রতিফলিত করে যে, শিক্ষা এমন হওয়া উচিত যা একই সঙ্গে সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ও বৈশ্বিক সচেতনতা গড়ে তোলে। আমাদের ছাত্রছাত্রীরা হ্যালোউইনকে শুধু পাশ্চাত্যের উৎসব হিসেবে নয়, বরং এক সেতুবন্ধন হিসেবে উদযাপন করেছে — যেখানে রায়ের ভূতরা সহজেই হলিউডের ভূতের সঙ্গে একাত্ম হতে পারে।”

প্রধান শিক্ষিকা মিসেস অন্সু সিনহা যোগ করেন,
“আদিত্য একাডেমিতে আমাদের হ্যালোউইন উদযাপন শুধু পোশাক বা আনন্দের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়—এটি এক সাংস্কৃতিক মিলনক্ষেত্র। আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষা কেবল পাঠ্যপুস্তকে সীমাবদ্ধ নয়, এটি প্রত্যেক শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতা, সামাজিক সচেতনতা এবং সার্বিক বিকাশকে লালন করে।”

উৎসবের সমাপ্তি হয় এক বর্ণাঢ্য প্যারেডের মাধ্যমে, যা জানিয়ে গেল—সৃজনশীলতার কোনও সীমা নেই, আর গল্প বলাই পারে পৃথিবীর নানা সংস্কৃতিকে একসূত্রে বাঁধতে।


Discover more from SRB News Bangla

Subscribe to get the latest posts sent to your email.