শিকড়ের টানে কতো মানুষ শেষ বয়সেও একবার নিজের জন্মভূমিকে দেখতে যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে ফেলে আসা সেই জন্মভূমিকে অনেকেই আর চিনতে পারেন না। অচেনা মুখের মধ্যে নিজেকেও খুঁজে পান না। তাই সেই জন্মভূমিতে না ফিরে, ছোটবেলায় হারানো চেনা মুখ খুঁজে নিতে আর পরের প্রজন্মকে নতুন মাটিতে পুরনো শিকড়ের সন্ধান দিতে কলকাতাকেই তাদের শেষ আশ্রয় হিসাবে বেছে নিয়েছেন বিহারের মজফফরপুর থেকে এরাজ্যে আসা কয়েকজন মানুষ।


একসময় মজফফরপুর অবিভক্ত বাংলার অংশ ছিল, এখন বিহারে। এই জায়গার কথা উঠলে প্রথমেই যাঁর নাম মনে পড়ে তিনি ক্ষুদিরাম বসু। কিন্তু সে অন্য ইতিহাস। সেই ঐতিহাসিক স্থান ছেড়ে জীবিকার সন্ধানে যাঁরা বহু দিন আগে এসেছিলেন শহর কলকাতা বা তার আশপাশে, বাংলা ভাষা শিখে, বাংলার সঙ্গে আত্মীয়তা স্থাপন করে ধীরে ধীরে বাঙালি হয়ে উঠেছেন যাদবপুরের ইন্দুমতী সভাগৃহে তাঁরাই মিলিত হয়েছিলেন সপরিবারে। তাঁরা কথা বললেন ফেলে আসা দিন আর শৈশব নিয়ে। আর পরের প্রজন্ম জানতে পারল আগের প্রজন্মের বাঙালি হয়ে ওঠার কথা।


আগে বিনোদনের রমরমা ছিল না, আর যোগাযোগের জন্য ছিল না এত উন্নত ব্যবস্থা। চিঠি লেখা হয়ে উঠত না। আর ঠিকানা পরিবর্তনের সঙ্গে অনেক সময়ই কালের অতলে তলিয়ে যেত সম্পর্ক। কিন্তু মোবাইল ফোন আর সোশ্যাল মিডিয়া সেই ছিঁড়ে যাওয়া সুতোগুলোকে আবার জোড়া লাগিয়েছে। নতুন করে শিকড় পেয়েছে পুরনো গাছ। তাদের ছড়িয়ে থাকা শাখাপ্রশাখাও এক হয়েছিল। কত আলাপ, কত পরিচয়। খাওয়া-দাওয়ারও ব্যাবস্থা ছিল। তবে সেসব এদিন গৌণ হয়ে গিয়েছিল। যা চিরতরে হারাতে বসেছিল তাকে পাওয়ার আনন্দ ছিল প্রৌঢ় ও প্রবীণদের চোখেমুছে। স্মার্টফোন হাতে নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিরা তাঁদের আত্মার বন্ধনের কাছে অনেকটাই ম্লান হয়ে গিয়েছিল।
এদিনের অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা ছিলেন শ্যামশ্রী রায়চৌধুরী। সঞ্চালনায় মধুমিতা মুখার্জী।
প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রেনিক শেঠ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ সম্মান জানানো হয় গ্র‍্যান্ড মাস্টার ও অর্জুন পুরষ্কারে ভুষিত দিব্যেন্দু বড়ুয়া ও চিত্র পরিচালক সৈকত দাস কে। শ্যামশ্রী রায়চৌধুরী, রুমা চাটার্জী ও হিরক চ্যাটার্জীর সঙ্গীত অনুষ্ঠানে অন্য মাত্রা এনে দেয়।
নৃত্য পরিবেশন করেন অঞ্জলী মুখার্জী। মুজাফফরপুরের বহু বিশিষ্ট মানুষ এদিন উপস্থীত হন।


Discover more from SRB News Bangla

Subscribe to get the latest posts sent to your email.