সোমসন্ধ্যায় মধ্য কলকাতার জ্ঞানমঞ্চে কোহিনূর ড্যান্স একাডেমি নিবেদন করল নৃত্য ছবি দ্রোহী ও রাবণ । পুরাণ কাহিনী ও সমসাময়িক কালের নারী দমনের আধারে প্রথম পর্বে মঞ্চায়ন হয় দ্রোহী।১৮ জন নারী নৃত্যশিল্পী যাঁরা সংগঠনের ছাত্রী তাঁদের নিপুণশৈলী দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে।

মহাভারতের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র দ্রৌপদীর কুরু সাম্রাজ্যের সভায় লাঞ্ছনার প্রেক্ষিতে বর্তমান ভারতের আচ্ছেদিন রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নারীর ধর্ষণ , খুন ও লাঞ্ছনার প্রেক্ষাপট বিষয়ের ক্যানভাসে মূর্ত হয়ে ওঠে। কাহিনী নির্মাণে কৌশিক সেনগুপ্তের ভাবনা এক সামাজিক বার্তা হয়ে ওঠে। আত্ম সমালোচনার কষাঘাতে দর্শকদের ভাবতে বাধ্য করায়।

দ্বিতীয়ার্ধে সংগঠনের প্রাণপুরুষ কোহিনূর সেন বরাট রাবণ আলেখ্যর মূল চরিত্রে মঞ্চ কাঁপালেন। সঙ্গে ১৬ জন পুরুষ শিল্পী। যাঁরা প্রত্যেকেই গুরুদক্ষিণা দিলেন মঞ্চে। ব্রাহ্মণ্যবাদী আর্য সংস্কৃতির ধারক বাহকদের হাতে রামায়ণ হয়েছে বিকৃত। বাল্মীকির রামায়ণে যেখানে প্রতিটি চরিত্র গড়ে ওঠে মানবিক ধারায় সেখানে পরবর্তী লেখক কবিদের মনের মাধুরী মিশিয়ে দেবত্ব আরোপিত করে পরিবেশন করা হয়।

এই অনুষ্ঠানে দর্শকরা জানলেন, রাক্ষস অর্থের সঠিক সংজ্ঞা। জানলেন শৈব উপাসক দ্রাবিড় সংস্কৃতিকে কিভাবে কালিমাযুক্ত করা হয়েছে। শুরু থেকে শেষ দুটি পর্বই শিল্পী কলাকুশলীদের ছন্দময় উপস্থাপনায় দর্শক এক মুহূর্তের জন্য অন্যমনস্ক হতে পারেননি। শিল্পের সৃষ্টি সমাজ নির্মাণের জন্য শুধু নান্দনিকতা নয়। এই মুহূর্তে সাংস্কৃতিক অবক্ষয় ও রাষ্ট্রশক্তির অপপ্রচারের বিরুদ্ধে চপোটাঘাত বলা যায়। দুটি আলেখ্যই প্রথম রজনী। অথচ পেশাদারী শৈলীতায় যা চরম উৎকর্ষের প্রমাণ মিলল। অনুষ্ঠানের শেষে উপস্থিত কোহিনূর সেন বরাটের নৃত্য গুরুমা অনিতা মল্লিক সহ বিশিষ্ট ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পীদের সম্বর্ধনা জানালেন কোহিনূর ও তাঁর সংগঠনের ছাত্রছাত্রীরা। ছবি রাজেন বিশ্বাস


Discover more from SRB News Bangla

Subscribe to get the latest posts sent to your email.