ম্যায় জি ভর জিয়া, ম্যায় মন সে মরু, লৌট কর আয়ুঙ্গা, কুছ সে কিউ ডরুঁ?
তু দবে পাঁও, চোরি- ছিপে সে না আ, সামনে ওয়ার কর ফির মুঝে আজমা। মৌত সে বেখবর, জিন্দেগি কা সফর, শাম হর সুরময়ি রাত বংশী কা স্বর। বাত অ্যায়সি নহি কি কোই গম হি নেহি, দর্দ আপনে পরায়ে কুছ কম ভি নেহি ,,,,,,,, বহুমুখী প্রতিভার আকর প্রয়াত কবি, প্রাবন্ধিক,


প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর কবিতা আজও দেশের মানুষের কাছে উদ্দীপনার স্মারক হয়ে আছে।২০১৮ ১৬ আগষ্ট ৯৩ বছর বয়সে তিনি প্রয়াত হয়েছেন। ১৬ আগষ্ট ২০২৪ তাঁর ষষ্ঠ প্রয়াণ দিবস।আর এক ব্যাক্তিত্ব তথা ভারতকেশরী ও বাংলার রক্ষাকর্তা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় মঞ্চের একদিকে দুজনের প্রতিচ্ছবি। অন্যদিকে গোপাল মুখোপাধ্যায়ের প্রতিচ্ছবি। মঞ্চের পিছনে গোপাল মুখোপাধ্যায়ের একটি প্রতিকৃতি সেখানে লেখা গোপাল মুখার্জির স্মরণে। এই তিন আদর্শের নায়ককে শ্রদ্ধা জানিয়ে মঞ্চে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, খোলা হাওয়া সংগঠনের সভাপতির ডঃ স্বপন দাশগুপ্ত, প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় এবং স্বামী প্রদীপ্তানন্দ মহারাজের সহাবস্থান। উপস্থিত ব্যক্তিত্বদের পুষ্পস্তবক দিয়ে বরণ করে নেন সংগঠনের অগ্রণী যুব কর্মী ডঃ বিশ্বজিৎ দাস।

শুক্রবার সন্ধায় মধ্য কলকাতার আই সি সি আর মঞ্চে বাংলার বুদ্ধিজীবী , শিল্পীদের সংগঠন খোলা হাওয়া আয়োজন করেছিল বঙ্গসন্তান গোপাল মুখার্জি স্মরণে একটি ভাবগম্ভীর আলোচনা সভা।১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট কলকাতার হিন্দু বাঙালি সম্প্রদায়ের প্রায় ১০ হাজার মানুষ মৌলবাদী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিকল্পিত আক্রমণের শিকার হয়ে নৃশংস ভাবে প্রাণ হারান। নীরব দর্শকের মত সেই সময়ের বাংলার শাসক সরাবর্দী হোসেন সেই অপরাধের প্রশ্রয় দেন। মানব সভ্যতার ইতিহাসে ১৯৪৬সালের ১৬ আগষ্ট দিনটি একটি কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। সেদিন অল্প কিছু সঙ্গীকে সঙ্গে নিয়ে হিন্দু নিধন প্রতিরোধে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন গোপাল মুখার্জি। যিনি পরিচিত ছিলেন গোপাল পাঁঠা নামে। তাঁর ব্যবসা ছিল পাঁঠার দোকান। দোকান অলংকৃত করে থাকতেন স্বয়ং শক্তির দেবী মা কালী। শক্তি ও ভক্তি সমন্বয়ে গোপাল মুখার্জির প্রতিরোধে সেদিন বহু হিন্দুর প্রাণ রক্ষা হয়। জেহাদি মুসলিম ধর্মান্ধ হিংস্র মানুষ সেদিন গোপাল মুখার্জির প্রতিরোধে পিছু হটতে বাধ্য হয়।

সাম্প্রদায়িক ঐক্যের ধুয়ো তুলে স্বাধীন ভারতের শাসকেরা সেই ইতিহাসকে মুছে দিয়েছে ইতিহাসের পাতা থেকে। কিন্তু সত্যকে বেশিদিন চেপে রাখা যায় না । হিন্দু বাঙালি আজ জেগে উঠছে। এই প্রেক্ষিতে বাংলার শিরদাঁড়া সোজা করে চলা বুদ্ধিজীবীদের একটা নৈতিক দায় থেকে যায়। প্রাজ্ঞ, বাগ্মী প্রাক্তন সাংবাদিক ও রাজ্যসভার প্রাক্তন সদস্য ডঃ স্বপন দাশগুপ্তের
সুনেতৃত্বে গড়ে ওঠা বুদ্ধিজীবী সংগঠন খোলা হাওয়া তাই আয়োজন করে গোপাল মুখার্জি স্মরণে এক আলোচনা সভা। উদ্দেশ্য, রাজ্যের সনাতনী হিন্দু ঐতিহ্যের বাহক গোপাল মুখার্জির বীরত্বের কথা নতুন প্রজন্মের কাছে পৌছে দেওয়া। প্রারম্ভিক ভাষণ দেন প্রবীণ ব্যাক্তিত্ব তথাগত রায়। তিনি তাঁর স্বভাবজাত ভঙ্গিমায় স্পষ্ট কথার বুনন নৈপুণ্যে হিন্দু বাঙালির অস্তিত্বের সংকটের কারণ ব্যাখ্যা করেন। জোটবদ্ধ হয়ে মৌলবাদী ইসলামিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সংকল্প গ্রহণ করতে বলেন।

পরবর্তী বক্তা স্বামী প্রদীপ্তানন্দ মহারাজ। যিনি কার্তিক মহারাজ নামে পরিচিত। তিনি ঋষি অরবিন্দ , বিবেকানন্দর বাণী উল্লেখ করে বলেন, মানবিক আচরণ মানুষের ধর্ম হলেও অন্যায়ের বিরুদ্ধে পেশী শক্তি প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা আছে। তিনি বলেন কৃষ্ণকে আমরা ঝুলন যাত্রায় দোল দিয়ে আর পিচকিরির রং দিয়ে করুণা রসে সিঞ্চিত করি। ভুলে যাই কৃষ্ণের বীর রসের কথা। কত ছোট থেকে তিনি সমাজরক্ষায় শত্রু নিধন করেছেন। গীতায় দেখেছি অর্জুন আত্মীয়ের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণে পাপের ভাগী হতে অসম্মত হচ্ছেন তখন কৃষ্ণই তাঁকে বোঝান অন্যায়ের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ ও রক্তক্ষয় সঠিক ধর্ম। সেকথাই অন্তর দিয়ে বুঝেছিলেন বঙ্গসন্তান গোপাল মুখার্জি। তাই তো তিনি বাহুবলকে আশ্রয় করে পরধর্মে অসহিষ্ণুদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে তাঁদের পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছিলেন।

পরিপূর্ণ দর্শকাসনে তখন অধীর অপেক্ষা বিরোধী দলনেতা লড়াকু শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য শোনার জন্য। ইতিমধ্যেই গোপাল মুখার্জির সাহসিকতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কার্তিক মহারাজ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর লড়াকু ভূমিকার উচ্চ প্রশংসা করেন। বিপুল করতালিতে দর্শকেরা সেই বক্তব্যকে সমর্থন জানান। মঞ্চে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারী দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, আগামীতে আমাদের মরণপণ লড়াই। এ লড়াই জিতলে তবেই হিন্দু বাঙালির অস্তিত্ব বাঁচবে। আমরা সেই লড়াইয়ের শক্তি অর্জন করতে এবং আজকের প্রজন্মের কাছে সনাতনী হিন্দুত্বের রক্ষাকারী গোপাল মুখার্জির প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করব। ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে গীতা আর তুলসী গাছ। আর এক প্রস্থ করতালির মধ্যে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, দুর্নীতি আর সংখ্যালঘু তোষণের মধ্য দিয়ে হিন্দু বাঙালিকে খাদের এক প্রান্তে পৌঁছে দিয়েছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। সঙ্গী তাঁর কিছু চটি চাটা তথাকথিত বুদ্ধিজীবী ও পুলিশ। প্রয়োজনে বাহুবল প্রয়োগ করে হিন্দু বাঙালিকে অস্তিত্ব নিরাপদ করতে হবে। শিরদাঁড়া সোজা করে অন্যায়ের বিরূদ্ধে প্রতিরোধ করার শিক্ষা দিয়েছেন অটলবিহারী বাজপেয়ী, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ও গোপাল মুখার্জি। এই ত্রয়ীর আদর্শকে স্মরণে রেখে আপনারা জোট বাঁধুন।

অনুষ্ঠানের আয়োজক সংগঠন খোলা হাওয়ার সভাপতি স্বপন দাশগুপ্ত বলেন, অটলবিহারী বাজপেয়ীর সাহায্য না পেলে মমতা রেলমন্ত্রী হতেন না। রেলমন্ত্রী না হলে আজকের তৃনমূল দলের উৎপত্তিই হতো না। ভোট রাজনীতির নামে মুসলিম তোষণ করে হিন্দু বাঙালিকে বিপদে ফেলেছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। তাই এখন দরকার গোপাল মুখার্জির মত সাহসী হিন্দু বাঙালি। দরকার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির মত দূরদর্শী হিন্দু বাঙালি। আলোচনা সভার শেষে সভাগৃহের বাইরে আর জি কর মেডিকেলের ধর্ষিতা হয়ে খুন হওয়া মহিলা চিকিৎসকের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয় মোমবাতি হাতে নিয়ে। বহু সংখ্যক নারী পুরুষের উপস্থিতিতে এদিনের গোপাল মুখার্জির স্মরণ অনুষ্ঠান এক ঐতিহাসিক দিবস হিসেবে আর একবার প্রতিষ্ঠিত হল। ছবি রাজেন বিশ্বাস


Discover more from SRB News Bangla

Subscribe to get the latest posts sent to your email.