মুম্বাই দুনিয়ায় ব্রাহ্ম পরিবারের শর্মিল ঠাকুর পতৌদি নবাবকে বিয়ের সূত্রে মুসলিম হয়েছেন বেগম আয়েশা সুলতানা নামে। এই মুহূর্তের কলকাতাও পেতে চলেছে নবাগতা এক অভিনেত্রী তামান্না সুলতানাকে।
পারিবারিক ঐতিহ্য আইনি পেশায়। কিন্তু ছোট থেকেই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নাচ , অভিনয়ের চেষ্টা, দেব -কোয়েলের পাগলু দেখে পাগলা হওয়া। তারপর ? তার আর পর নেই। সময়ের সঙ্গে একটু একটু করে বেড়ে ওঠা বঙ্গকন্যা তামান্না সুলতানার। বাড়ির পরিবেশ যেহেতু আইনি পেশার সঙ্গে যুক্ত, স্বাভাবিকভাবেই প্রচ্ছন্ন একটা চাপ ছিল জাজ হতে হবে। কৈশোর পেরিয়ে হেরিটেজ স্কুল। সেখানে প্যাশন হয়ে উঠল ফ্যাশন, মডেলিং, বার্ষিক অনুষ্ঠানে নাচ,অভিনয়। সে অর্থে তাম্মানার কোনো গুরু নেই। তামান্নার তামান্না ছিল শুধু নিজেকে গড়ে তোলা । এভাবেই একদিন যোগাযোগ। মডেলিংয়ের র্যাম্পে নামা। খ্যাতি যশ আসতে থাকে। শেষ পর্যন্ত বি এ, এল এল বি স্তর পেরিয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য দুবাই যাওয়া। কিন্তু মন চল নিজ নিকেতনে। শরীরের তন্তুতে তন্তুতে, শিরা উপশিরায় যখন নাচ, অভিনয়, মডেলিং তখন আইনি প্যাঁচে মন কি ধরা দেয়?
একান্ত সাক্ষাৎকারে তামান্না জানালেন, দুবাইতে পড়াশোনার জন্য গেলেও লোভনীয় চাকরি পেয়ে যাই এক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থায়। সেখানে ইভেন্টের কাছে ইতি উতি ঘুরে বেড়ানো। কিন্তু বিদেশে বেশিদিন থাকা হলো না। ফিরেই এলাম নিজের শহর কলকাতায়। তবে বাড়ির ঐতিহ্যের বিপরীত স্রোতে ভাসতে যিনি আমাকে সবচেয়ে বেশি সমর্থন করেছেন তিনি আমার ঠাকুমা। যাঁকে আমি মাম্মি বলে ডাকি। প্রথাগত পথের বাইরে পথ চলার ক্ষেত্রে মা,বাবা ও বিখ্যাত আইনবিদ পিসেমশাইকে রাজি করানোর ভার নেন ঠাকুমা।এখন অবশ্য পারিবারিক সমর্থন পাচ্ছি পুরোটাই।
তামান্না জানালেন , কাজের সূত্রে মুম্বাই গিয়ে যেমন কাজ করেছি -তেমন একটা অনলাইন নাটকের অভিনয় কোর্স করেছি। অনুপম খেরের একটা এক মাসের অভিনয় কোর্সও করেছি। অভিনয়ে অভিব্যক্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে আমি সাহায্য নিচ্ছি নিভিন্ন সিনেমার বিখ্যাত শিল্পীদের অভিনয় দেখে।বিশেষত বাংলা ছবি। আমার ঠাকুমা তো গ্রেট ফ্যান উত্তমকুমারের। ঠাকুমার সঙ্গে বসে উত্তমকুমারকে চেনার চেষ্টা করি। ইদানিংকালের চর্চার বিষয় মি টু সম্পর্কে সাংবাদিকদের উত্তরে তাম্মানা জানান , পুরুষশাসিত সমাজব্যবস্থায় সবক্ষেত্রেই নারী শোষণের একটা ব্যাপার আছে। বিনোদন জগৎ বলে মানুষের কাছে বিষয়টা বেশি আলোচিত হয়। কোন ক্ষেত্রে নারী শোষণ হচ্ছে না? তবে এখন মেয়েরা আগের চেয়ে একদিকে যেমন নিজেদের যোগ্যতাকে বাড়িয়ে তুলত পেরেছে, তেমনই রুখে দাঁড়াতেও সাহসী হয়েছে। আসলে দুনিয়ায় যেমন কিছু খারাপ লোক আছে, তেমন ভালো লোকও তো আছে । নিজের বৌদ্ধিক চেতনা দিয়ে বুঝে নিতে হবে।জানেন তো, মেয়েদের অনুভূতি খুবই প্রখর। আমরা বুঝতে পারি সাদা কালোর পার্থক্য। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি মানুষকে বিশ্বাস করে অনেক ঠকেছি তাই আমার পরিচিতি বাড়লেও কিন্তু বন্ধু বলতে তিনজন। এঁদের একজন পুরুষ। আমি একটু ইন্ট্রোভার্ট বলতে পারেন। কাজের সময়টুকু ছাড়া বাড়ির চার দেয়ালের মধ্যে আমি বিশ্বকে খুঁজে পাই। অভিনয়, নাচ অনুশীলনে দিনের অধিকাংশ সময় কাটাই। অনেকে সিরিয়ালে আসব কি না বলেন। আসলে আমি খুব চঞ্চল। কোথাও আমার হারিয়ে যেতে নেই মানা। তাই দিনের পর দিন একটি কাজে সময় ধরে চলা বোধহয় আমার জন্য নয়।
অবসর বলতে তামান্নার কি? তামান্নার জবাব, খেতে বড ভালবাসি। রান্নাও করতে পারি সবরকম। তবে বাড়ির সবাই আমার চিনে খাবারের স্বীকৃতি দেয় বেশি। তবে খেতে ভালবাসি যেমন, তেমন ব্যালেন্স করি দিনে কমপক্ষে চারঘণ্টা নাচের প্র্যাকটিশ করে। সঙ্গে ওয়ার্কআউট তো কিছু আছেই। এবার পুজোয় একটি মিউজিক ভিডিওতে কাজে করেছি। আজই সেটা রিলিজ করেছে। বলো দুগ্গা মা। ওসিয়ান পিকচার্স এর এই মিউজিক ভিডিওর সঙ্গে আমার মনে হয় মানুষ একাত্ম হতে পারবেন। কয়েকটা দিন সময় দিন। খুব শিগগির আপনাদের কাছে জানাবো কয়েকটি বড় পর্দার ছবির কথা। এসেছি যখন , প্রমাণ করে ছাড়ব হাম কিসিসে কম নেহি।
Discover more from SRB News Bangla
Subscribe to get the latest posts sent to your email.