কলকাতা, ১৯ মে ২০২৩: ভারতে জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ক্যান্সার একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এই বিষয়ে উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান এই ইঙ্গিত করছে যে প্রতি নয়জনের মধ্যে একজনের তাদের জীবদ্দশায় এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২২ সালে, ভারতে ক্যান্সারের আনুমানিক ১৪,৬১,৪২৭ টি ঘটনা দেখা গিয়েছিল, যা ২০২৫ সালে ১২.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গ, বিশেষ করে উন্নত ক্যান্সার সচেতনতা, প্রাথমিক সনাক্তকরণের অ্যাক্সেসযোগ্যতা এবং উন্নত চিকিৎসা বিকল্পগুলির জন্য একটি জরুরি প্রয়োজনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছে। ২০২৫ সালের জন্য রাজ্যের ক্যান্সার নির্ণয়ের প্রজেক্টেড কেসগুলি`র মধ্যে পুরুষদের ক্ষেত্রে ৬০,১৬৯ টি এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৬১,৪৭০টি কেস উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২০ সালে পুরুষদের মধ্যে ছিল ৫৩,৭৫৮ টি এবং মহিলাদের মধ্যে ছিল ৫৪,৬৩৬ টি ক্যান্সারের ঘটনা। পশ্চিমবঙ্গে ক্যান্সারের কারণে মৃত্যুর ঘটনার মধ্যে প্রধান ছিল ফুসফুসের ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার এবং জরায়ুমুখের ক্যান্সার। এই বিষয়টি মাথায় রেখে, মণিপাল হাসপাতাল, ওল্ড এয়ারপোর্ট রোড ভারতের পূর্বাঞ্চলে ক্যান্সার রোগের উদ্বেগজনক বৃদ্ধির বিষয়ে ১৯ মে কলকাতায় একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে।
মণিপাল কম্প্রিহেনসিভ ক্যান্সার সেন্টার, বেঙ্গালুরু, সার্জিক্যাল অনকোলজিতে নিজেদের অগ্রগতির মাধ্যমে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে ক্ষমতায়নের পথে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ক্যান্সারের পর্যায় এবং বায়োলজি অনুযায়ী এই সেন্টার সার্জারি করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। সেই ক্ষেত্রে এটি নিশ্চিত করা হয়ে থাকে যে প্রয়োজন অনুসারে রোগীদের জন্য রোবোটিক এবং ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি, ইমিউনোথেরাপি, টার্গেটেড থেরাপি, মলিকুলার-ভিত্তিক টার্গেটেড থেরাপি, হাইপারথার্মিক ইন্ট্রাপেরিটোনিয়াল কেমোথেরাপি (এইচআইপিইসি), প্রেসারাইজড ইন্ট্রাপেরিটোনিয়াল অ্যারোসল কেমোথেরাপি (পিআইপিএসি), র্যাডিক্যাল ও আল্ট্রা র্যাডিক্যাল সার্জারি ও সাইটোরিডাক্টিভ সার্জারি, ইত্যাদির মত ন্যূনতম আক্রমণাত্মক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এই সমস্ত ইনোভেটিভ টেকনিকগুলি ইআরএএস (এনহেন্সড রিকভারি আফটার সার্জারি) প্রোটোকল দ্বারা অনুসরণ করা হয় যা ক্ষতগুলিকে দ্রুত কমিয়ে দেয়, অস্ত্রোপচারের পরে ব্যথা হ্রাস করে, সুপ্রা-মেজর ক্যান্সার সার্জারির পরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে এবং পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়।
বেঙ্গালুরুর মনিপাল হাসপাতাল ওল্ড এয়ারপোর্ট রোড-এর মনিপাল কমপ্রিহেনসিভ ক্যান্সার সেন্টারের কনসালট্যান্ট, সার্জিক্যাল অনকোলজি ডাঃ হেমন্ত জি এন পার্সোনালাইজড ক্যান্সার সার্জারির রূপান্তরমূলক প্রকৃতির উপর জোর দেন। বলেন, "ক্যান্সার সার্জারি একটি দৃষ্টান্তমূলক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গিয়েছে এবং অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে আমরা একটি প্রযুক্তিগত বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি। সেই দিনগুলি চলে গিয়েছে, যখন ক্যান্সারের অস্ত্রোপচারের জন্য ভয়, বিশাল দাগ এবং দীর্ঘক্ষণ হাসপাতালে থাকতে হতো। সার্জারি
র ক্ষেত্রে এহেন ফোকাসটি ক্যান্সার সার্জারিগুলিকে স্বতন্ত্র রোগীদের অনন্য প্রয়োজনে স্থানান্তরিত করেছে যেখানে আমরা উন্নত প্রযুক্তি এবং যন্ত্রের সাহায্যে ছোট ও সুনির্দিষ্ট পরিমানে কাটা`র সঙ্গে সুনির্দিষ্ট সার্জারির উপর ফোকাস করে থাকি।”
বেঙ্গালুরু`র মনিপাল হাসপাতাল ওল্ড এয়ারপোর্ট রোড-এর মনিপাল কমপ্রিহেনসিভ ক্যান্সার সেন্টারের কনসালট্যান্ট, সার্জিক্যাল অনকোলজি ও রোবোটিক সার্জারি ডাঃ মোহাম্মদ বশিরুদ্দিন ইনামদার বলেন, “রোবোটিক সার্জারি ক্যান্সারের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছে। এই ক্ষেত্রে ছোট ছেদ সহ ন্যূনতম আক্রমণাত্মক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, যার ফলে দ্রুত পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়। এই পদ্ধতিটি থাইরয়েড, ফুসফুস, খাদ্যনালি, পাকস্থলি, কোলোরেক্টাল এবং গাইনোকোলজিক্যাল ক্যান্সারের সার্জারির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। কার্সিনোমা স্তনে সেন্টিনেল লিম্ফ নোড বায়োপসি, এন্ডোমেট্রিয়াম বিশাল মাত্রার অপ্রয়োজনীয় সার্জারি এবং লিম্ফেডেমা এবং ফোলা হওয়ার মত জটিলতা এড়াতে সাহায্য করে।“
বেঙ্গালুরু`র মনিপাল হাসপাতাল ওল্ড এয়ারপোর্ট রোড-এর মনিপাল কমপ্রিহেনসিভ ক্যান্সার সেন্টারের এসোসিয়েটেড কনসালট্যান্ট, গাইনোকোলজি অনকোলজি ডাঃ প্রতিমা রাজ যোগ করলেন, “সাম্প্রতিক ক্যান্সার প্রতিরোধ এবং প্রাথমিক সনাক্তকরণ প্রক্রিয়া আণবিক জ্ঞান এবং ঝুঁকি স্তরবিন্যাসের প্রোফাইলগুলির একীকরণের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করেছে, যাতে ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের সঠিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে আরও নিখুঁতভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব হয়। ক্যান্সার প্রতিরোধের বিষয়ে ভবিষ্যৎ এবং প্রাথমিক শনাক্তকরণের প্রচেষ্টায় সূক্ষ্ম ক্যান্সার প্রতিরোধ সংহতকরণের উপর জোর দেওয়া উচিত, যেখানে স্ক্রিনিং এবং ক্যান্সার প্রতিরোধের পদ্ধতিগুলি পরিচিত জিনোমিক এবং পরিবেশগত কারণগুলির জন্য ক্যান্সারের ঝুঁকির সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া যেতে পারে।”
ক্রমবর্ধমান ক্যান্সারের সমস্যার মোকাবিলা করা যেতে পারে শুধুমাত্র প্রাথমিক সনাক্তকরণের অ্যাক্সেসকে উন্নত করে এবং উন্নত চিকিৎসা এবং পার্সোনালাইজড কেয়ার প্ল্যান-এর মাধ্যমে। এটি শুধুমাত্র ক্যান্সার রোগীদের মনে আশা
র সঞ্চারই করবে না বরং ক্যান্সারকে পরাজিত করার জন্য আরও অগ্রগতি ঘটানোকে অনুপ্রাণিত করবে।
আরও তথ্যের জন্য অনুগ্রহ করে যোগাযোগ করুন: ১৮০০ ১০২ ৪৬৪৭
Discover more from SRB News Bangla
Subscribe to get the latest posts sent to your email.