বিগত কয়েক বছর ধরে ঝাড়গ্রামের প্রতন্ত্য আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামে অসহায় মানুষদের শিক্ষার আলো দেখাচ্ছে পিত্রাশিষ ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশন পরিচালিত “আও স্কুল চলে” প্রজেক্টটি সমাজের অবহেলিত এই অনাথ শিশুদের জীবনযুদ্ধে এগিয়ে চলার পথ দেখাচ্ছে। ঝাড়গ্রামের লোধাশুলিতে একটি অনাথ আশ্রম পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে পিত্রশিষ ফাউন্ডেশন। যেখানে রয়েছে আদিবাসী সমাজের গরিব-বঞ্চিত বিশেষভাবে সক্ষম ছেলেমেয়েরা। অনাথ অসহায় ছেলেমেয়েদর সঙ্গে বিশেষভাবে সক্ষম ছেলেমেয়েরাও শিক্ষা ও সংস্কৃতির মেলবন্ধনে পারদর্শী হয়ে উঠছে। এই অনাথ ও বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের সুস্থ সুন্দর জীবন ধারণের জন্য নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু কর্মসূচি। ৮ জুলাই শনিবার বিধাননগরের EZCC প্রেক্ষাগৃহে অনাথ আশ্রমের আবাসিক শিশু ও বিশেষভাবে সক্ষম ছেলেমেয়েদের নিয়ে নাচ-গান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল পিত্রাশিষ ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানে এই শিশুরা বেশ কিছু আকর্ষণীয় নৃত্য ও সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকলাপ প্রদর্শন করে। বিশেষভাবে সক্ষম ছেলেমেয়েদের আনন্দ ও অনুপ্রেরণা দিতে প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী শুভমিতা ব্যানার্জি গান গাইলেন এই শিশুদের সঙ্গে। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্ট মানুষরা।
পিত্রাশিষ ফাউন্ডেশন সমাজের বঞ্চিত মানুষদের জন্য নানান কর্মকাণ্ড করে চলেছে গত কয়েকবছর ধরে। আদিবাসী অধ্যুষিত ঝাড়গ্রামে স্কুলছুট রুখতে “পিত্রাশিষ সাথি” নামে বিশেষ বাহিনী গড়া হয়েছে। এলাকায় শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে এই বাহিনী প্রতি মাসে শিক্ষা সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করে থাকে। ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহিত করতে বিনামূল্যে পড়াশুনার সামগ্রী দেওয়া হয়। আদিবাসী গ্রামবাংলার মেয়েদের পিরিয়ডস সম্পর্কে সচেতন করতে প্রতি মাসে “পবিত্র-লেটস টক পিরিয়ডস্” নামে সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়ে। যেখানে মহিলাদের স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতার বার্তা দেওয়া হয়। সংস্থার উদ্যোগে এলাকার মেয়েদের স্কুলে প্যাড ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে। আদিবাসী গ্রামের অসহায়, গরিব মানুষদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের জন্য বিশেষ কর্মসূচি “বস্ত্র-ক্লোথ ব্যাংক ফর দি নিড”। শহরাঞ্চলের মানুষদের থেকে অতিরিক্ত ও অব্যবহৃত জামাকাপড় সংগ্রহ করে সেটিকে সম্পূর্ণ ভাবে পরিশ্রুত করে পৌঁছে দিচ্ছে আদিবাসী গ্রামের মানুষদের। অসহায় বয়ষ্ক মানুষদের চলাফেরার সুবিধার্থে “ছড়ি- সাহারা জিন্দেগী কা” নামে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পরা বয়স্ক মানুষদের সঠিকভাবে চলাফেরা করতে লাঠি-ছড়ি ও পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয়। চলাফেরায় অক্ষম ও বিশেষভাবে সক্ষম ছেলেমেয়েদের হুইল চেয়ার দেওয়া হয় প্রতি বছর। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারা স্বাস্থ্য শিবির, বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ, পড়াশুনার সুবিধার্থে ল্যাপটপ বিতরণ করে নিরলস কাজ করে চলেছে পিত্রাশিষ ফাউন্ডেশন। পিত্রাশিষ ফাউন্ডেশন এই মহান উদ্যোগগুলিতে অংশগ্রহণ করতে আপনাদের সদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন সংস্থার সদস্যরা।
Related Posts
Spread the lovePress Note Swayam is a Kolkata based feminist organisation working for the last 28 years and is committed to advancing women’s rights and ending inequality and violence against…
Spread the love রোমানিয়ার কুকুটেনী ট্রিপিলিয়ান সভ্যতায় যিশুর জন্মের ৩৬০০ বছর আগে প্রথম যখন চাকা আবিষ্কার হয় তারপর ঠেলা থেকে আজকের অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিন গাড়ি মানব সভ্যতার বিবর্তনের সাক্ষ্য দিচ্ছে। দৈনন্দিন…