ছবি রাজেন বিশ্বাস
কলকাতা, 15 অক্টোবর, 2023: ব্লাড স্টেম সেল ডোনেশনের তাৎপর্য সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে এবং যুবদের সম্ভাব্য পরিত্রাতা রূপে উদ্বুদ্ধ করতে, ডিকেএমএস বিএমএসটি ফাউন্ডেশন ইন্ডিয়া জোট বেঁধেছে রোটারি ক্লাব কলকাতার জেলাপ সঙ্গে ব্লাড ক্যানসার ও রক্ত বিশৃঙ্খলায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য স্টেম সেল ট্রান্সপ্ল্যান্টেশনের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা প্রসারে।
রোটারি ক্লাব, বিএনআই এবং ইয়ং ইন্ডিয়ানসের মর্যাদাসম্পন্ন সদস্যরা একত্রিত হয়েছিল সম্ভাব্য স্টেম সেল ডোনার রূপে রেজিস্টার করতে যাতে যুবদের উদ্বুদ্ধ করা যায় স্টেম সেল ডোনারের বৈশ্বিক রেজিস্ট্রিতে নথিভুক্তি দ্বারা সম্ভাব্য পরিত্রাতা হয়ে উঠতে।
ভারতে, প্রতি বছর ১০০০০০ এর বেশি মানুষের ব্লাড ক্যানসারে মৃত্যু ঘটে, তারপরও মাত্র ৩০ শতাংশ রোগী, যাদের স্টেম সেল ট্রান্সপ্ল্যান্ট দরকার, এইচএলএ (হিউম্যান লিউকোসাইট অ্যান্টিজেন-টিস্যু টাইপ) ম্যাচিং ডোনার খুঁজে পায় তাদের পরিবারের ভেতরে। ৭০ শতাংশ এর বেশি রোগী তাকিয়ে থাকে অনাত্মীয় দাতাদের দিকে, কিন্তু সচেতনতার অভাবে, ভারতের জনসংখ্যার মাত্র ০.০৪ শতাংশ নথিভুক্ত হয়েছে সম্ভাব্য স্টেম সেল ডোনার রূপে। এথনিক ম্যাচিঙের তাৎপর্য অনুযায়ী, ভারতীয় রোগীদের উপযুক্ত স্টেমসেল ডোনার খুঁজে পাওয়ার সম্ভাব্যতা উচ্চতর হবে যখন ভারতীয়দের মধ্যে ডোনার খুঁজে পাবে।
ডিকেএমএস বিএমএসটি ফাউন্ডেশন ইন্ডিয়ার সিইও প্যাট্রিক পল দেশে ব্লাড স্টেম সেল ডোনারের অভাব সম্পর্কে বলেছেন, ‘প্রতি পাঁচ মিনিটে, ভারতে ব্লাড ক্যানসার বা ব্লাড ডিসঅর্ডার যেমন থ্যালাসেমিয়া বা অ্যাপলাস্টিক অ্যানিমিয়ার একটি নতুন কেস নির্ণীত হয়। ভারতীয় রোগীদের, যাদের লাইফ-সেভিং ট্রান্সপ্ল্যান্ট দরকার, কমপ্যাটিবল ব্লাড স্টেম সেল ডোনার পাওয়ার সম্ভাব্যতা একটি তাৎপর্যপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। বর্তমানে, গোটা বিশ্বে ৪১ মিলিয়ন নথিভুক্ত ডোনার আছে, যার মধ্যে ভারতে মাত্র ০.৬ মিলিয়ন দাতা। অগুন্তি রোগী লাইফ-সেভিং ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য উদগ্রীব হয়ে খুঁজছে একজন উপযুক্ত স্টেম সেল ডোনার। আমাদের উদ্দেশ্য, রোটারি ক্লাব বেঙ্গল জেলার সঙ্গে, সমাজের বিভিন্ন অংশে ব্লাড স্টেম সেল ডোনেশন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।“
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন আরটিএন হিরালাল যাদব, রোটারি ডিসট্রিক্ট ৩২৯১, বলেছেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে রোটারি যোগ দিয়েছে ডিকেএমএস-বিএমএসটির সহ্গে স্টেম সেল ডোনেশন সম্পর্কে সচেতনতা প্রসারে। রোটারিতে আমাদের কাজের মাধ্যমে, আমরা গুরুত্ব দিয়েছি অন্যের সেবা করা জীবনের একটি উদ্দেশ্য। অন্যদের প্রতি যত্ন ও সেবা দ্বারা, আমরা আশা করি সমাজে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলব। ব্লাড ক্যানসার ও ব্লাড ডিসঅর্ডার রোগীদের শুশ্রূষায় ডিকেএমএস-বিএমএসটির অবদানকে আমরা খুবই গুরুত্ব দিই। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস যে যদি আমাদের মধ্যে সেই স্ফুলিঙ্গ থাকে, আমরা নিজেদের ছাপিয়ে যেতে পারব এবং কাউকে দ্বিতীয়বার বাঁচার সুযোগ দিতে পারব। একটি জীবন বাঁচানোর চেয়ে অসাধারণ আর কিছুই হয় না। একটি সংস্থারূপে, আমরা খুবই গর্বিত এই উদ্যোগের অংশ হতে পেরে যা ব্লাড স্টেম সেল ডোনার রূপে নথিভুক্ত করার তাৎপর্য সম্পর্কে জনসচেতনতা গড়ে তোলে এবং একজন রোগীর জীবনে এর সত্যিকারের গুরুত্ব বোঝায়।’
ড. জীবন কুমার, সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ডিপার্টমেন্ট অব ক্লিনিক্যাল হেমাটোলজি ও বিএমটি, টাটা মেডিক্যাল সেন্টার, কলকাতা অনুষ্ঠানের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছিলেন সম্মাননীয় অতিথি রূপে, তিনি বলেছেন, ‘রক্তে উপস্থিত স্টেম সেল ডোনেট করা প্লেটলেট ডোনেট করার মতোই। স্টেম সেল দান করতে, দাতা ও রোগীর নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য ম্যাচ হওয়া উচিত। একে বলে এইচএলএ (হিউম্যান লিউকোসাইট অ্যান্টিজেন)। যদিও, রোগীদের মাত্র একটি ভগ্নাংশ একজন এইচএলএ-ম্যাচ করা ডোনার খুঁজে পায় তাদের পরিবারের ভেতরে, এবং ৭০-৮০ শতাংশ কেসের ক্ষেত্রে, রোগী তাকিয়ে থাকে ‘অনাত্মীয়’ ম্যাচিং ডোনারের দিকে। প্রতি বছর, প্রায় ৬৫০০০ নতুন অনুসন্ধান চলে বিশ্বব্যাপী একজন অনাত্মীয় ম্যাচিং ডোনারের জন্য, কিন্তু ভারতে, মাত্র ০.০৪ শতাংশ মানুষ নথিভুক্ত হয়েছে সম্ভাব্য স্টেম সেল ডোনার রূপে। ভারত হল সেই দেশ যেখানে সবচেয়ে বেশি অনুসন্ধানের ফলাফল ট্রান্সপ্ল্যান্টেনশন পর্যন্ত যায় না। এই ব্যবধানের একমাত্র সেতুবন্ধন হতে পারে যদি ভারতের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী থেকে আরও আরও মানুষ ডোনার রেজিস্ট্রির অংশ হয় ডিকেএমএস-বিএমএসটির মতো সংগঠন দ্বারা।
সাত বছরের থ্যালাসেমিয়া সারভাইভর পরিবারের সঙ্গে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল। থ্যালাসেমিয়ার সঙ্গে শিয়ার লড়াই শুরু হয়েছিল যখন ওর বয়স ছিল মাত্র নয় মাস। ডাক্তাররা তার মা-বাবাকে অবগত করে যে তার বাকি জীবনে নিয়মিত ব্লাড ট্রান্সফিউশন দরকার হতে পারে, এমন একটি ব্যবস্থা যা ভয়নাক এবং যন্ত্রণাদায়ক। যদিও, শিয়ার মা-বাবা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন একটি স্থায়ী আরোগ্য খুঁজতে। আশার আলো দেখা যায় যখন তাঁরা জানতে পারেন থ্যালাসেমিয়ার একটি সম্ভাব্য চিকিৎসা সম্পর্কে যা হল ব্লাড স্টেম সেল ট্রান্সপ্ল্যান্ট। এক বছরের মধ্যে শিয়ার জীবন মোড় নেয় ইতিবাচক দিকে যখন স্বার্থহীন ২৯ বর্ষীয় স্টেম সেল ডোনার দিব্যজ্যোতি, বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী, এগিয়ে আসেন, যাঁর সঙ্গে শিয়ার ম্যাচ ছিল। তিনি তাঁর ব্লাড স্টেম সেল দান করেন শিয়াকে দ্বিতীয় জীবনের জন্য।
ডিকেএমএস-বিএমএসটির সিইও প্যাট্রিক পল যোগ করেছেন, ‘আমরা রোটারি ক্লাব এবং তাদের নিবেদিতপ্রাণ সদস্যদের আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই তাদের মূল্যবান সহযোগিতার জন্য যা এই রেজিস্ট্রেশন ড্রাইভ সমন্বয়ে সাহায্য করেছে। ডিকেএমএস-বিএমএসটি বিভিন্ন ক্লাবের সঙ্গে বহু সচেতনতা ও রেজিস্ট্রেশন ক্যাম্পেন করেছে নিবেদিত হয়ে, বিশেষ করে গুরুত্ব দিয়েছে যুব প্রজন্মকে জড়িয়ে নিতে। রেজিস্ট্রিতে তাদের চলতি অংশগ্রহণ তাৎপর্যপূর্ণভাবে শিয়ার মতো রোগীদের জন্য ম্যাচিঙের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করেছে, যাদের এটা অত্যন্ত প্রয়োজন।“
আজ ৪১ মিলিয়নের বেশি সম্ভাব্য অনাত্মীয় ডোনার বিশ্বব্যাপী তালিকাভুক্ত স্টেম সেল ডোনার কেন্দ্র ও রেজিস্ট্রিতে, যাদের মধ্যে মাত্র ০.০৪ শতাংশ হল ভারতীয়। এই পরিস্থিতি একমাত্র বদলাতে পারে ভারত থেকে সম্ভাব্য আরও স্টেম সেল ডোনার নথিভুক্ত হলে। রেজিস্ট্রেশন করতে আপনার মাত্র ৫মিনিট লাগবে। যদি আপনার বয়স হয় ১৮ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে এবং সাধারণভাবে সুন্দর স্বাস্থ্যের অধিকারী, তাহলে একজন ব্লাড স্টেম সেল ডোনার হিসেবে রেজিস্ট্রি করতে প্রথম পদক্ষেপ করুন www.dkms-bmst.org/register এ আপনার হোম সোয়াব কিটঅর্ডার করার মধ্য দিয়ে।