Spread the love

কলকাতা, 19 ই জানুয়ারি 2023: বিভিন্ন রোগীদের রোগজনিত বিভিন্ন সমস্যার ব্যাপারে নিরন্তর যত্ন প্রদান করার লক্ষ্য নিয়েই সিপলা লিমিটেড (Cipla), এই বছরের শুরু থেকেই তার রোগীদের জন্য রোগ সচেতনতা ও তার নিরাময় সম্পর্কিত প্রচার উদ্যোগের সূচনা করেছে – যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ব্রীদ ফ্রি’ (Breathefree) যাত্রা। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হল বিভিন্ন মানুষকে তাদের ফুসফুসের সক্ষমতা শনাক্ত করা ও তাতে কোনও সমস্যা থাকলে, তার প্রকৃতি বুঝতে পারার ব্যাপারে সহায়তা করা। এটি চ্যানেলের আরও বেশি অ্যাক্সেস প্রদানের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়, যা তাঁদের হাঁপানি অথবা দীর্ঘস্থায়ী প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী ফুসফুস সংক্রান্ত রোগ (Chronic Obstructive Pulmonary Disease) বা COPD-এর মতো শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ নির্ধারণ করার ব্যাপারে কার্যকরীভাবে সহায়তা করতে সক্ষম হয়। ‘ব্রীদ ফ্রি’ (Breathefree) যাত্রার এই ক্যাম্পেনের অভীষ্ট লক্ষ্য হল আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে সারা ভারত জুড়ে 300টিরও বেশি ছোট ছোট শহর কভার করা এবং 60,000 জনেরও বেশি সম্ভাব্য রোগীদের জন্য সহায়তা প্রদান করা।

রোগ প্রাথমিক স্তরে থাকাকালীন তার সঠিক শনাক্তকরণকেই রোগ সংক্রান্ত সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ বলে গণ্য করা হয়। যদিও গ্লোবাল অ্যাস্থেমা নেটওয়ার্কের (GAN) স্টাডির একটি হিসাব অনুযায়ী, 82% পর্যন্ত রোগী, যাদের শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সময় সাঁ-সাঁ শব্দ হয় এবং 70% পর্যন্ত রোগী, যাদের গুরুতর হাঁপানির লক্ষণ রয়েছে, তাদের সমস্যা ও লক্ষণ প্রায়ই শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। COPD সংক্রান্ত রোগের ক্ষেত্রে, আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, ভারতে 95% থেকে 98% পর্যন্ত রোগীদের সমস্যা শনাক্ত করা যায় না। এই ভয়ানক বাস্তবতা বিভিন্ন কারণে হতে পারে, কিন্তু উপযুক্ত মেডিক্যাল সুবিধার অ্যাক্সেস প্রদান করার মধ্য দিয়ে, এই ধরনের সমস্যা ও রোগের লক্ষণ আরও শনাক্ত করার ক্ষেত্রে এটি অগ্রগণ্য ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে। এইভাবে, আরও উন্নত রোগীর সহায়তা সংক্রান্ত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করার ফলে, যাঁরা হাঁপানির মতো রোগে কষ্ট পাচ্ছেন, তাঁদের পক্ষে নিজেদের রোগের পরিস্থিতি আরও শীঘ্র নির্ণয় তথা শনাক্ত করতে সাহায্য করে। এর ফলে, তাঁরা নিজেদের রোগজনিত পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করে, নিজেদের সার্বিক জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত করতে পারেন।

পালমোনোলোজিস্ট (ফুসফুস সম্পর্কিত রোগ বিশেষজ্ঞ) ডাঃ কৌশিক সাহার মতানুসারে, “আমরা জানি যে শ্বাস-প্রশ্বাসের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপরিবর্তনীয় থাকে, কিন্তু তার সাথে সাথেই এটিও বাস্তব যে প্রারম্ভিক রোগ শনাক্তকরণ ও সময়মতো মেডিক্যাল মধ্যস্থতা তথা সহায়তার মাধ্যমে এই রোগ পরিস্থিতির উপরে নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব এবং তার সাথে একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন অতিবাহিত করাও সম্ভবপর হয়। যদিও বেশিরভাগ সময়েই এটি দেখা যায় যে অনেক ছোট শহরে রোগীরা পর্যাপ্ত মেডিক্যাল সাহায্য অ্যাক্সেস করতে পারে না অথবা অনেক সময় দেখা যায় যে তারা অ্যাস্থেমার মতো পরিস্থিতির সাথে সম্পর্কিত রোগ লক্ষণের ব্যাপারে ততটা সজাগ বা সচেতন থাকেন না। এর সাথেই এই ধরনের রোগের সাথে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কলঙ্কের ধারণা তথা কুসংস্কার যুক্ত হয়ে রয়েছে, তার কারণে এই রোগের শনাক্তকরণ বা চিকিৎসার ক্ষেত্রে এখনও রোগীদের নানা প্রকারের বাধা-বিঘ্নের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় — এই কারণে এই রোগ ও তার চিকিৎসার ব্যাপারে জনসাধারণের মধ্যে প্রচার করাটা বিশেষ প্রয়োজনীয়। সেইসূত্রেই ‘ব্রীদ ফ্রি’ (Breathefree) যাত্রার মতো উদ্যোগ আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রাম চলার ফলে রোগীদের জন্য স্ক্রিনিং ও ডাক্তারি পরামর্শ পাওয়ার সুবিধার মাধ্যমে মেডিক্যাল সহায়তা অ্যাক্সেস করার সুবিধা প্রদান করার অনেক বেশি সহজতর হয়। এটি রোগীদের নিজেদের অবস্থাকে আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করে এবং তার ফলে তাদের জীবনে একটি প্রকৃত পার্থক্য তৈরি করার পথ সুগম করে।”
আমাদের ‘প্রতিটি জীবনের জন্য যত্ন ও পরিচর্যা প্রদান’-এর সুমহান উদ্দেশ্যের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে, যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, আমাদের সাথে যুক্ত রোগাক্রান্ত মানুষজন সর্বদাই তার মূল লক্ষ্য হিসাবে অবস্থান করেন। এই সূত্রে, ‘ব্রীদ ফ্রি’ (Breathefree) প্রোগ্রাম একটি যথার্থ উদাহরণ হিসাবে আমাদের সামনে উঠে এসেছে যার মাধ্যমে কোম্পানি তার অভিলাষ ও ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপায়ণ করার কাজে সফল হয়েছেন। ‘ব্রীদ ফ্রি’ (Breathefree) প্রোগ্রামের ধারাবাহিক প্রয়াসের মাধ্যমে রোগীর সহায়তার উদ্যোগের একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিচ্ছবি পাওয়া যায়, যার মধ্যে রোগীদের রোগ নির্ধারণ, রোগের বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান ও তার চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে রোগীদের যত্ন পরিচর্যার সর্বাঙ্গীণ যাত্রা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এই প্রোগ্রামের মহৎ উদ্দেশ্যের জন্য নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষাবিদ ও অন্যান্য পেশাদার ব্যক্তিদের একটি বিশাল নেটওয়ার্ক প্রোগ্রামের গতিশীলতা ও অবয়ব, উভয়কেই আরও প্রসারিত করতে পেরেছে। এর ফলে সারা দেশ জুড়ে অসংখ্য রোগী ও তাদের পরিবার উপকৃত হয়েছেন এবং ‘ব্রীদ ফ্রি (Breathefree) যাত্রা’র মতো আউটরিচ তথা প্রচারমূলক প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত বিভিন্ন উদ্যোগের ফলেই এটি সম্ভবপর হয়েছে। বাস্তবত, এই উদ্দেশ্যকেই আরও ফলপ্রসূ করার লক্ষ্য নিয়ে, ‘ব্রীদ ফ্রি’ (Breathefree) প্রোগ্রাম, ইনহেলেশন ডিভাইস ব্যবহারের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য, ভারতের 1ম (প্রথম) ডিজিটাল এডুকেটর, ‘ব্রীদ ফ্রি (Breathefree) ডিজিটাল এডুকেটর’ সংস্থার মাধ্যমে ডিজিটালি প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেও এর উপস্থিতিকে প্রসারিত করতে পেরেছে। ডিভাইস ব্যবহারের সঠিক কৌশল, ডিভাইসের রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে সাতটি ভাষায় ইনহেলার ব্যবহারের ক্ষেত্রে কী কী করণীয় এবং করণীয় নয়, তার ব্যাপারে কাউন্সেলিং তথা পরামর্শ প্রদান করা পর্যন্ত, নানা ধরনের সহায়তা প্রদান করে। এই ধরনের বিস্তৃত কর্মকাণ্ডের সাথে একাত্ম হয়েই এই প্ল্যাটফর্ম সারা দেশ জুড়ে হাঁপানি রোগী তথা অ্যাস্থেমা রোগীদের জন্য যত্ন এবং সহায়তা প্রদানের আরও একটি স্তর এর সাথে যুক্ত করেছে, যার ফলে রোগীদের শারীরিক ও রোগজনিত পরিস্থিতির আরও উন্নতিসাধনও সম্ভব হয়েছে।