জলপাই গাছের পাতার মুকুট পরিয়ে ক্রীড়া উৎসবের বিজয়ী প্রতিযোগীদের স্বীকৃতি জানানো হতো। সময়টা ছিল খ্রিস্টপূর্ব ৭৭৬ । প্রধানত প্রতিযোগীরা ছিলেন পুরুষরাই। যদিও একজন বিজয়ী মহিলা প্রতিযোগী বিলিস্টিচ ছিলেন অলিম্পিকের শুরুর সময়ে। সমাজবিজ্ঞানী জর্জ হার্বার্ট মিড ও জিন পিয়াগেট বলেছেন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে শৈশব ও কৈশোরের স্তর পেরিয়ে একজন মানুষ নিজের আত্মবোধ উপলব্ধি করতে পারে। মানসিক ও দৈহিক স্বাস্থ্যের ইতিবাচক প্রভাব একজন মানুষকে পরিণত করে। জর্জ বার্নার্ড বনশ দারুণ একটা কথা বলেছিলেন। বুড়ো হয়ে যাওয়ার জন্য আমরা খেলাধুলা থামাই না , বরং খেলাধুলা থামাই বলে আমরা বুড়ো হয়ে যাই। ব্যারন পিয়ারে দ্যা কুবার্তো ছিলেন ফরাসি শিক্ষক , ইতিহাসবিদ ও আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির প্রতিষ্ঠাতা ও দ্বিতীয় সভাপতি। তিনি বলেছেন, খেলাধুলা না করলে নিছক বিদ্যা অনুশীলনে যৌবনের উদ্যম , শক্তি ও কর্মক্ষমতার অপচয় ঘটবে। বিশ্ব জুড়ে তাই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজেদের সাধ্য মত প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে অন্তত বছরে একবার ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন।

সেই তালিকায় যুক্ত কলকাতার শ্রী চৈতন্য টেকনো স্কুল। শুক্রবার ও শনিবার দুদিনব্যাপী নিউ টাউন সংলগ্ন নিজেদের মাঠে তারা আয়োজন করে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। প্রথমদিন ছিল কচিকাঁচা ও প্রাথমিক ছাত্রছাত্রীদের অনুষ্ঠান। দ্বিতীয়দিন উচুঁ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের প্রতিযোগিতা। অনুষ্ঠানের নামকরণ হয় রাইস টু দ্য চ্যালেঞ্জ। অনুষ্ঠানের প্রথমদিন মুখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় রাজারহাট নিউটাউন অঞ্চলের বিধায়ক তাপস চ্যাটার্জি, বিশেষ অতিথি নিউটাউন পুলিশ স্টেশনের এস আই নুরুল পুরকায়েত, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিখ্যাত ফুটবলার কল্যাণ লোধ। ছিলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিজনেস ডেভলপমেন্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডের মুখ্য পরিচালক ও সহযোগী এস সি টি এস , সৃজিতা সিকিউরিটি অ্যান্ড ফ্যাসিলিটি সার্ভিসের মুখ্য পরিচালক বিশ্বজিৎ দেবনাথ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরদুটি শাখার দুই অধ্যক্ষা স্বাতী গোস্বামী ও জলি জুবিন।

উপস্থিত স্থানীয় বিধায়ক তাপস চ্যাটার্জি বলেন, আমার নির্বাচনী ক্ষেত্রে শ্রীচৈতন্য টেকনো স্কুলের মত একটি আদর্শ স্কুল তৈরি হয়েছে যা আমাদের জন্য গর্বের। উন্নত দেশের বুনিয়াদ ছোটরা। তাঁরা এখন সিলেবাসের পড়ার চাপে ব্যস্ত। তাদের মানসিক বিকাশের পাশাপাশি শারীরিক বিকাশ ও সাংস্কৃতিক বিকাশেরও প্রয়োজনীয়তা আছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ সে ব্যাপারে সজাগ বলেই এমন সুন্দর একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। ছোটদের দলবদ্ধ উপস্থাপনায় আমি মুগ্ধ। স্কুলের দুটি শাখার অধ্যক্ষা বলেন, খেলাধূলা কোনো অতিরিক্ত বিষয় নয়, পড়াশোনার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী জড়িত। আমাদের স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা বার্ষিক ক্রীড়া উৎসবে সাফল্যের মাত্রা স্পর্শ করেছে। আমরা গর্বিত আমাদের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে। দুদিনব্যাপী এই বার্ষিক এই উৎসবে শুধু ছাত্রছাত্রী নয় , অভিভাবকদের মধ্যেও ছিল ব্যাপক উৎসাহ।


Discover more from SRB News Bangla

Subscribe to get the latest posts sent to your email.